মাসিক কবিতাপত্র সাপ্তাহিক অনলাইন ।। সংখ্যা ৩।। ২২ আগষ্ট, ২০২০
কানাইলাল জানা ।। যাদুকর যা করে
তেমন সুসময় এলে অবসরকে কেটে কেটে হাঁস বানাই। পুকুরে ছেড়ে দিলে প্যাঁক প্যাঁক করে ডানা ঝাপটায়। আমি ফিরে পাই পদ্ম আর শালুকে ভরা গ্রাম বাংলা..
যখন খুব লাফিয়ে ওঠে ইচ্ছে শক্তি, সম্ভাবনাকে কেটে কেটে বানাই জিরাফ ও তার বাচ্চা। ছেড়ে দিই রাস্তাঘাটেঃ ছেলে ছোকরারা জিরাফ দেখবে আর জিরাফের মতো লম্বা হতে চেষ্টা করবে...
ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে তাকেও কেটে চানা করি। দুঃসময়কে ঢোক গিলে যারা অগোছালো, এক চানা ছড়িয়ে দিই যাতে বেঁধে ফেলতে পারে অফুরন্ত ভালোবাসা। পাগলের প্রলাপের মতো ভয়
যাদের জড়িয়ে ধরেছে সেখানেও পাঠাই এক চানা,চুমকি লাগানো আকাশ থেকে যাতে ঝরতে পারে কামরাঙা সাইজের ঘুম...
অর্ক রায়হান ।। থিরথির কাঁপছে রঙিন বেলুনগুলো
তেমনিই থিরথির কাঁপছে রঙিন বেলুনগুলো।
থিয়েটার গেটের কাছে মঙ্গোলিয়ান চেহারার
ইউনিফর্ম পরা মেয়েটি আজ আর নেই। সিলন
চা’র আউটলেটের জায়গায় কী এক অস্ট্রেলিয়ান
জুস বার এখন! আগে মাইকেল বাবলের কভার
গান বাজতো। ওই কাউন্টারে তুমি ছিলে। আমি
এখানেই কোনও একটা চেয়ারে বসতাম। আহ্,
এভাবেই থিরথির থিরথির কাঁপতো উৎসবের
লালনীল বেলুনগুলো! নববর্ষ আসন্ন।
অরূপ সেনগুপ্ত ।। পথিক
এক রাতে ঘুমের মধ্যে শুরু পথ চলা,
গন্তব্য? নিশ্চিন্তপুর ছাড়িয়ে আরো অনেক অনেক দূর,
পথে একে একে চেনা মানুষগুলো সব যায় হারিয়ে,
প্রতিবারেই কিছু নীরবতা, হা-হুতাশ, নয়নবৃষ্টি এক পশলা;
এখন সবই অচেনা; প্রগাঢ় তমস, খঁয়াটে নগর, শূণ্য খেয়ার তীর,
উজান শেষে ভাটার টানে পঙ্কিলতার ভীড়;
জংধরা ডুবো তরী, অস্পষ্ট অতীত, নৈঃশব্দের কথকতা,
পূর্ব স্মৃতির ন্যায় দীর্ণ প্রহেলিকা, রাত্রির বধিরতা,
কিছু ভগ্নস্তুপ, আশাবরীর ভাঙা আশা, পুরানো পোষাক,
ঐ শোনা যায় আষাঢ় মেঘের গুড়ু গুড়ু, সব বন্ধন ভেঙে ফেলার ডাক!
চোখের নিমেষে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এক একটা অটুট বন্ধন, অস্ফুট স্বপ্ন,
রাত ভোর হয়, জেগে ওঠে অলীক - ব্যর্থ মনস্কাম;
পথিক চলে পথ অহর্নিশ, আর কিছু দূরেই যে অন্তিম সীমান্ত,
আকাশে রামধনুর ঐ প্রান্তে পূবালির অণ্বেষণ।।
কাঞ্চন রায় ।। অল্প কথার গল্প
আমি কবিতা লিখেছি তুমি আবৃত্তি করে নিও,
আমার অল্প কথার গল্পটিকে কাহিনী করে দিও।
ছুটির দিনে আনমনা হয়ে পুরোনো কোনো গানের কথায়,
নিখোঁজ মনের ঠিকানা পেতে আমায় ভেবে নিও।
কোনো এক ক্ষণে হারিয়ে ফেলা, আঙ্গুলের কোলে আমার ছোঁয়া;
ভালোবাসা খুঁজো সেই পরশে,আমায় ভালোবেসে ফেলো।
যেদিন তুমি একলা ঘরে বিভোর কোনো বাঁশির সুরে,
কল্পনারই দেয়াল জুড়ে আঁকছো আঁকিবুকি—
কিংবা শ্রাবণ, অগোছালো মন
ভরাট হৃদয় সিক্ত নয়ন;
আশ্রয়হীন খোলাচুলে একলা তুমি একলা মনে,
ভিজছো বিহ্বল দৃষ্টিতে—
পথ হারানোর সময় এলে সঙ্গী আমায় নিও।
এমন যদি নাও বা হয় তোমার মনের জানালাতে,
ভাবনা আমার খেয়ালখুশির থাকুক না হয় আসকারাতে।
প্রেমটা আমি সাজিয়ে নেব
গল্প নাই বা সত্যি হলো,
স্বপ্ন দেখার দলিল আমার
তাই ভাবতে তোমায় দোষ কি বলো?
টোকন মান্না ।। প্রতিমা
১.
এখন চাঁদের আলোয়
মাটির ক্ষরণ হয়।
এমনই করে কি হারিয়ে যাবে জীবন
কলাপাতার শিশিরের ফুটো চোখ দিয়ে
প্রতিমা মৃন্ময়।
২.
পাখিদের যাওয়া আসা নিবরতায় বৃষ্টি
প্রতিবাদ
রক্তাক্ত রাজনীতির পোকা খায় শেকড়।
আলো এসে ঘুরে যায় মননে
একটা ঝড়ে ভেঙে যায় নীড়
তবু সে অসহায় নয়
মৃত্যুর কাছে।
৩.
আজ ফিরে যাবো ঘরে
আগুন জ্বলছে আগুনের স্পর্শে
এমনই দেহের বাতাস এসে ডুবে যায়
গাঙনদীতে .
সুদীপ্ত বিশ্বাস ।। শূন্যতা
দিনকে ফাঁকি দিতে পারলেও
রাতের কাছে হেরে যাই রোজ!
স্বপ্নেরা সব মুখ থুবড়ে পড়ে
চোখের জলে বালিস ভিজতে থাকে।
তারপর খুব ক্লান্ত হলে,
গভীর ঘুমে পাই মৃত্যুর স্বাদ।
সারারাত জ্বলতে-জ্বলতে
রাতের তারার সলতে ফুরিয়ে যায়।
আবার একটা দিন...
আবার ছোটা শুরু...
কাঞ্চন রায় ।। অল্প কথার গল্প
আমি কবিতা লিখেছি তুমি আবৃত্তি করে নিও,আমার অল্প কথার গল্পটিকে কাহিনী করে দিও।
ছুটির দিনে আনমনা হয়ে পুরোনো কোনো গানের কথায়,
নিখোঁজ মনের ঠিকানা পেতে আমায় ভেবে নিও।
কোনো এক ক্ষণে হারিয়ে ফেলা, আঙ্গুলের কোলে আমার ছোঁয়া;
ভালোবাসা খুঁজো সেই পরশে,আমায় ভালোবেসে ফেলো।
যেদিন তুমি একলা ঘরে বিভোর কোনো বাঁশির সুরে,
কল্পনারই দেয়াল জুড়ে আঁকছো আঁকিবুকি—
কিংবা শ্রাবণ, অগোছালো মন
ভরাট হৃদয় সিক্ত নয়ন;
আশ্রয়হীন খোলাচুলে একলা তুমি একলা মনে,
ভিজছো বিহ্বল দৃষ্টিতে—
পথ হারানোর সময় এলে সঙ্গী আমায় নিও।
এমন যদি নাও বা হয় তোমার মনের জানালাতে,
ভাবনা আমার খেয়ালখুশির থাকুক না হয় আসকারাতে।
প্রেমটা আমি সাজিয়ে নেব
গল্প নাই বা সত্যি হলো,
স্বপ্ন দেখার দলিল আমার
তাই ভাবতে তোমায় দোষ কি বলো?
টোকন মান্না ।। প্রতিমা
১.
এখন চাঁদের আলোয়
মাটির ক্ষরণ হয়।
এমনই করে কি হারিয়ে যাবে জীবন
কলাপাতার শিশিরের ফুটো চোখ দিয়ে
প্রতিমা মৃন্ময়।
২.
পাখিদের যাওয়া আসা নিবরতায় বৃষ্টি
প্রতিবাদ
রক্তাক্ত রাজনীতির পোকা খায় শেকড়।
আলো এসে ঘুরে যায় মননে
একটা ঝড়ে ভেঙে যায় নীড়
তবু সে অসহায় নয়
মৃত্যুর কাছে।
৩.
আজ ফিরে যাবো ঘরে
আগুন জ্বলছে আগুনের স্পর্শে
এমনই দেহের বাতাস এসে ডুবে যায়
গাঙনদীতে .
সুদীপ্ত বিশ্বাস ।। শূন্যতা
দিনকে ফাঁকি দিতে পারলেও
রাতের কাছে হেরে যাই রোজ!
স্বপ্নেরা সব মুখ থুবড়ে পড়ে
চোখের জলে বালিস ভিজতে থাকে।
তারপর খুব ক্লান্ত হলে,
গভীর ঘুমে পাই মৃত্যুর স্বাদ।
সারারাত জ্বলতে-জ্বলতে
রাতের তারার সলতে ফুরিয়ে যায়।
আবার একটা দিন...
আবার ছোটা শুরু...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন