মাসিক কবিতাপত্র সাপ্তাহিক অনলাইন ।। সংখ্যা ৩।। ২২ আগষ্ট, ২০২০
ছবিঃ হিরণ মিত্র
মলয় মজুমদার ।। দুটি কবিতা
ঈশ্বরের পদাবলী
১)
মাথার মধ্যে আঁশটে দুর্গন্ধ -
কেউ যেন ছোবল মেরে নিয়ে গেছে সংসার,
ঘামের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিষাক্ত আগুন ।
দুধেলা শরীরের ভাঁজে পোকা ,
কেউ একজন চেনা মানুষ আমার ,অথবা মানুষী ।
অজানা আকাশ
এখানেই মৃতের গল্প লিখেছিল কবি ।
এখানেই শরীর বিক্রি করেছিল এক নারী
তারই দুর্গন্ধ আমার শরীরে ।
মাংসাশী মেঘ ও মেয়েরা , আমি ও পুরুষেরা,
খাতা ভর্তি করে পাঠানো প্রেম,
খয় হয়ে যাওয়া জীবন নিয়ে বুড়ি বেশ্যার দল বিষাদের
গল্প বলে ।
আমি শুনি , শুনতে থাকি । পোয়াতি শরীরে ক্লান্তির
রকম ভেদ , প্রেমিকার মন । রঙিন খামে
বিষণ্ণ সুখ নিয়ে আসে রোদ্দুর । কে জানে কেন আসে,
কেন বার বার ভালোবাসি ভালোবাসি বলে দুর্বল যৌনতা
নিয়ে আসে দুপুরের ঘাম । তোকে ডাকে , ওই মেয়ে
তোকেই ডাকে কেউ । যোনির প্রয়োজন আজ পুরুষের ।
সব শূন্যতা আজ উন্মাদ , মাথার কোষগুলো বকবক করে,
তুই আছিস , তুই থাকিস । রোদ্দুরে লাল শরীর, একবার
ছায়ার পাশে গিয়ে দেখ
কালো রঙ হৃদয়কে লাথি মেরে
বিক্রি হয় শুধু , নাভি -স্তন-নাভির নীচের আকাশ
এইভাবেই তো একদিন
ঈশ্বরের সাথে দেখা হবে পুরানো চায়ের দোকানে ।
আমার ঘাম, আমার নষ্ট সামগ্রিক , আমার অবৈধ গল্প
ঘুণপোকার সাথে বদল করবো মুখপোড়া খচ্চরের গানে ।
২)
আবরণহীন স্বপ্নের সাথে ভেসেছি বহুকাল,
ক্ষুধা নিঙড়ে নাভির অন্ধকার খোঁজে বুনোহাঁস ।
শিকড়গুলো ছড়িয়ে পড়েছে,
মাটির সাথে সহবাস,
মাটি ও মাটির ভেতর আমি, আমার অচেনা কেউ,
শুধু দুই উরুর ভাঁজে খুঁজে পাওনা
বসন্তের উত্তাপ ।
জেগে থাকি । জেগে থাকি হাহাকার কিছু
শব্দের প্রয়োজনে
ঠিক সেই সময় তুমি আসো, চিমনির
ধোঁয়াটে অন্ধকারে
টিলার উপর সূর্য্যের আগুন, লাল রঙ স্পর্শ করে হাত ,
নদীর বুকে জ্বলে ওঠে প্রেম,
কে যেন সূর্য্যেকে হাতে করে দাঁড়ায় বারান্দায় ।
তবু আবরণহীন স্বপ্নের সাথে ভাঙা রাতের গল্প বলি,
পাখিরা শোনে
উত্তর দেয়না কোন , পাখিরা বোঝে -
বোঝাতে পারেনা কিছু
তখন নদীর ঢাল বেয়ে মাঝির চোখ ছুঁয়ে ফেলে পূর্নিমার স্রোত ।
মাঝি আবরণহীন ঘাসের সাথে পাথরের বুকে খোঁজে রক্ত গোলাপ, কবিতার জন্যে,
তোমার জন্যে
শব্দ নয় - গোলাপের এক একটি পাপড়িতেই তুমি শুনতে পারবে
প্রেমের কবিতা ।
তারপর হাঙর আর ঈশ্বর এক সাথে
পার হবে চূর্ণীর জল ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন