দুটি কবিতা/বৌধায়ন মুখোপাধ্যায়

বৌধায়ন মুখোপাধ্যায়।।দুটি কবিতা
শোকগাথা ১
কে আমার আদি পিতা, কে সেই প্রাচীনতম মাইক্রোব
আমার বাদামি শরীরে দিলে
এতো অভিশাপ অন্ধত্ব
আমি তো আজন্ম আত্মসর্বনাশ বিভেদি কুঠার
হাতে নেমেছি নীলঘাস ঠেলে
উন্মাদ সমযুদ্ধে
আমি সর্বস্ব উজাড় করে
ঢেলেছি তপ্তবিষ গোলাপ শরীরে
খুব শীত ,খুব শীতাক্ত নয় কি
গোলাপ শরীর ?
এর নাম অকাল বিধ্বস্ত খেত
সর্বগ্রাসী সাইক্লোন
এর নাম অসময় , সুরজাল
ভাসমান অন্ধকার ,কয়েকটি ভাঙা এলিমুনিয়াম থালা
ফুটপাথে পড়ে আছে অলীক প্রত্যয়ে
আর মাথায় সোনালী চাঁদ , ওহে ফুলটুসি ন্যাকামির চাঁদ
তুমি কেন মুচকি হাসো, আমার স্বপ্নে যদি শুয়ে থাকে
মরা কাক
আরো দূরে যাও আরো দূরে
আরো দূর গ্রামে
আমি সামান্য কাঁথার নিচে শুয়ে ছিলাম রাতভোর
পাশে মৃত্যুযন্ত্রণায় বাউল কৃষ্ণদাশ, সকালে তার গাবগুব , কাঠের মতো নিস্পন্দ শরীর
রেখেছিলাম নাবাল জমিতে
কোনো আকাশ ছিল না মাথায়
এবার পানির দেখা নাই খরিপ চাষের সময় l
সারাক্ষন বমনেচ্ছা হয় , কতমাস ছুঁইনি রংতুলি
গলায় টের পাই ক্রমাগত
দীর্ঘ হয় গলগণ্ডল মরামাস
বিছানা থেকে খড় উড়ে যায়
উপে যায় অস্তিত্ব আমার ۔۔۔۔
প্রলেপগাথা
অতঃপর কোনো বৃদ্ধি নেই , বিস্তার নেই
আমি তাই আরো একা হতে চাই l হে শামুক , তোমার খোলের ভেতর
আমায় সামান্য জায়গা করে দাও
আমার চলতি শরীর যেন স্থির
হয়ে যায় লীন হয় তোমান্তরে
নিস্পন্দ পাথর হয়ে পড়ে থাকে পথের কিনারে ,অচেনায় ,অন্ধকারে l
কোনো শিশুর কোঁচড়ে মাথা পেতে শুতে চাই
শিশুর স্পন্দিত হাত ধূমল মাথায় নিশিন্দা পাতার মতো
সুস্থ প্রলেপ -----
গেইটের মতো উন্মাদ হওয়ার আগে একবার শান্ত হোক চিন্তার জ্বালামুখ
হে শিশু তুমি আরো আদরের হয়ে ওঠো প্রতিটি শিশুবর্ষে
আমার কপাল থেকে সরিয়ে নাও তেজষ্ক্রিয় চুল
আমি এক প্রাগৈতিহাসিক ডোডো কে এগিয়ে আসতে দেখি সারাক্ষন
যুদ্ধবাজ মানুষের মতো আধপোড়া বাহুমূল
কোনো পৈশাচিক শয়তান সংক্রামক ভাইরাসের মতো
আমার জন্য বয়ে আনে অনিবার্য ক্ষয়ের সংবাদ
এক বোধহীন রিক্ততায় বেলা কেটে যায়
চারপাশে পাতা ঝরে দগ্ধ দুপুরে
চৈতন্যের শেষ বিন্দু মুছে যায়
দুটি মানসম্পন্ন কবিতা পড়লাম ।
উত্তরমুছুনদারুণ!
উত্তরমুছুন